ম্যাচের শুরুতে দলকে উইকেট এনে দিয়েছিলেন কাটার মাস্টার মোস্তাফিজুর রহমান। এরপর তার পাশে নাম লেখালেন তাসকিন, শরিফুল সাকিব। এরপর আবারও মোস্তাফিজের ঝলক। আর তাতেই প্রথম ওয়ানডেতে ৪৯ ওভার ১ বলে ২১৫ রানে অলআউট হয়েছে আফগানিস্তান।
বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে টস জিতে ব্যাটিং করতে নামে সফরকারীরা।
প্রথম ওভারেই মোস্তাফিজকে দারুণ এক চার মারেন ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ। তৃতীয় ওভারে দলের স্কোর ১১ রান তোলার পর এগিয়ে এসে মারতে চেয়েছিলেন এই ব্যাটার, কিন্তু ব্যাটে বলে ঠিকমতো লাগেনি। অনেক উঁচুতে ওঠা ক্যাচ মিড অনে ধরেন টাইগার অধিনায়ক তামিম। ১৪ বলে ৭ রান করে সাজঘরে ফেরত যান গুরবাজ।
প্রথম উইকেট হারানোর পর ৪৫ রানের জুটি পায় আফগানিস্তান। ধীরে ধীরে আগ্রাসী হয়ে উঠছিলেন ইব্রাহিম ও রহমত। জুটিটা ভাঙেন শরীফুল। এই বোলারের গুড লেংথের বলে ২৩ বলে ১৯ রান করে আউট হয়েছেন ইব্রাহিম। ব্যাটের কানায় লেগে স্লিপে ইয়াসিরের হাতে ধরা পড়েন ইব্রাহিম।
এরপর অধিনায়ক হাশমতুল্লাহ ও রহমত শাহ দলের হাল ধরেন। কিন্তু পাওয়ার প্লেতে মার খাওয়া তাসকিন ডেথ ওভারে এসে তুলে নেন সেট ব্যাটার রহমত শাহকে। ৬৯ বলে ৩৪ রান করে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দেন তিনি।
এরপর আফগানদের অস্বস্তিতে ফেলে দেন স্পিন অলরাউন্ডার মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার স্পিনের বিষে উইকেটের পেছনে মুশফিকের হাতে তালুবন্দি হয় শাহেদীর ব্যাটে লাগা বল। আফগান অধিনায়কের ব্যাট থেকে আসে ৪৩ বলে ২৮ রান।
১০২ রানে ৪ উইকেট হারানো পর পঞ্চম উইকেটে নাজিবউল্লাহ জাদরান আর অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবী গড়েন ৬৩ রানের জুটি। এই জুটির উপর ভর করেই স্কোর বোর্ডে ২০০ ছাড়ানো স্কোর পায় আফগানিস্তান। এই জুটি চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ালে বোলিংয়ে বৈচিত্র আনেন তামিম।
তাসকিনের করা ইনিংসের ৩৯তম ওভারের প্রথম বলে কাভার দিয়ে চার মারেন নবী। পরের বল কাট করার চেষ্টায় ব্যাটে-বলে করতে পারেননি এই অলরাউন্ডার। পরের বলে আবার ড্রাইভ করেন, এবার ব্যাটের কানায় লেগে ক্যাচ যায় মুশফিকের গ্লাভসে। ২৪ বলে দুই চারে ২০ রান করেন নবী। ভাঙে ৬৩ বলে খেলা ৬৩ রানের জুটি।
১৬৫ রানে নবী আউট হবার পর একপ্রান্ত ধরে খেলে নিজের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ১৩তম অর্ধশতক তুলে নেন নাজিবউল্লাহ। তবে অন্যপাশে বাংলাদেশি বোলারদের ধ্বংসলীলায় সুবিধা করতে পারেননি বাকিরা।
যে সাকিব শুরুতে ছিলেন বেশ খরুচে বোলার, সেই সাকিবই ইনিংসের ৪৫তম ওভারে এসে জোড়া আঘাতে ফেরান গুলবাদিন নাইব আর পাকিস্তান সুপার লিগ মাতিয়ে আসা রাশিদ খানকে।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিলে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করেন নাজিবুল্লাহ। তার ব্যাট থেকে আসে ৮৪ বলে ৬৭ রান। যেখানে ৪টি চার ও ২টি ছয় মেরে শরিফুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন তিনি।
মূলত নাজিবউল্লাহর ব্যাটে চেপেই নির্ধারিত শেষ ওভার অলআউট হওয়ার আগে স্কোর বোর্ডে ২১৫ রানের পুঁজি পায় আফগানিস্তান। বাংলাদেশের পক্ষে মুস্তাফিজ ৩টি এবং শরিফুল, সাকিব ও তাসকিন প্রত্যেকে ২টি করে উইকেট নেন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পান বাকি ১ উইকেট।